Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজন নিরাপদ খাদ্য ও পানি

মানুষের জীবনের জন্য খাদ্য ও পানি অপরিহার্য। সব পানি যেমন পানের যোগ্য নয়, তেমনি সব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য সুখকর নয়। এক কথায় বলা যায় একমাত্র বিশুদ্ধ পানিই কেবল পানের যোগ্য। ঠিক তেমনি সব খাদ্য স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ নয়। শুধু স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ খাদ্যই জীবনকে বাঁচাতে, রোগমুক্ত রাখতে সক্ষম। তবুও বেঁচে থাকার জন্য আমাদের খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তবে তা অবশ্যই পুষ্টিকর, সুষম, ভেজালমুক্ত এবং নিরাপদ হওয়া প্রয়োজন। এ ধরনের খাবার ও পানি একজন মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে      সহায়তা করে। তবে প্রতিদিনের খাদ্যই যদি বিষাক্ত হয়, পানি দূষিত ও পানের অযোগ্য হয়, তাহলে আমাদের জীবনে   প্রতিমুহ‚র্তে হুমকির সম্মুখীন হতে হয়।
বাঙালির প্রধান খাদ্য ভাত। এটি সত্য, আমরা এখন চালসহ সবরকমের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু সেই খাদ্য আমাদের জীবনের জন্য কতটুকু নিরাপদ, মানসম্মত ও স্বাস্থ্যসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন সাপেক্ষ। আমরা প্রতিদিন যা খাচ্ছি তা পুরোপুরি অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ এটা হলফ করে বলা যাবে না। আবার সব খাদ্য ও পানি যে স্বাস্থ্যকর,নিরাপদ তাও নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে বেশির ভাগ খাদ্য ও পানি ভেজাল, নিম্ন মানের। ‘২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পানি সরবরাহ, পয়োনিষ্কাশন, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্যের বিশ্লে­ষণ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে বিভিন্ন উপায়ে সরবরাহ করা খাবার পানির ৪১ শতাংশ ডায়রিয়ার জীবাণু বহন করছে। পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা ৮০ শতাংশ পানিতে আছে ক্ষতিকর জীবাণু। শহরাঞ্চলে পাইপলাইনে সরবরাহ করা ট্যাপের ৮০ শতাংশ পানিতে ক্ষতিকর জীবাণু ই-কোলাই রয়েছে। প্রতিবেদন  আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, ‘পানির দূষণ ও নিম্নমান’ অনেক অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। কাজেই এই দূষিত ও মানহীন পানি ব্যবহার করে প্রস্তুত করা খাদ্য সামগ্রীকেও দূষিত করছে। আর সেই দূষিত খাবার আমরা প্রতিদিন গ্রহণ করছি।
ভেজাল, অনিরাপদ খাদ্য ও পানির পরিবর্তে বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্যসম্মত ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকারের নানামুখী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত, জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত টহল কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও এই কার্যক্রম প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এই কার্যক্রম শুধু রাজধানীতে নয়, বিভাগীয় পর্যায়, জেলা এমনকি উপজেলা পর্যন্ত স¤প্রসারিত হওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত মনিটরিং করা অপরিহার্য। একই সাথে মাটি, পানি ও ফসলকে বিষমুক্ত রাখার প্রযুক্তি ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করা ও এর সঠিক প্রয়োগ প্রয়োজন।
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন বেড়েছে। নতুন নতুন ধান আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। অধিক ফসল উৎপাদন করতে গিয়ে জনস্বাস্থ্যকে আমরা হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছি। ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির গবেষণায় কৃষি পণ্যের মধ্যে ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, সিসা ও আর্সেনিকের অস্তিত্ব মিলেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, সিসা ও আর্সেনিক মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে তা বের হতে পারে না। সব কটিই দীর্ঘমেয়াদে কিডনি, লিভার ও মস্তিষ্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়া ক্যান্সারসহ নানাধরনের ক্রণিক রোগের বড় উৎস হচ্ছে এসব রাসায়নিক। এগুলো ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
ইউরোপীয় কমিশনের নীতিমালা অনুসারে মানবদেহের জন্য ক্রোমিয়ামের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা হচ্ছে ১ পিপিএম। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের গবেষণায় চালে ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে ৩.৪১৪ পিপিএম পর্যন্ত। ক্যাডমিয়ামের সহনীয় মাত্রা ০.১ পিপিএম হলেও গবেষণায় পাওয়া গেছে ৩.২৩৯৫ পিপিএম পর্যন্ত। সিসার সহনীয় মাত্রা ০.২ পিপিএম হলেও পাওয়া গেছে ১.৮৭ পিপিএম পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালে ক্যাডমিয়ামের প্রধান কারণ জমিতে নিম্নমানের টিএসপি সার প্রয়োগ এবং গার্মেন্টস শিল্প, ওষুধ কারখানা, টেক্সটাইল ও ট্যানারির অপরিশোধিত বর্জ্য। তাদের মতে, পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহারের পরিণতি কমবেশি সবাইকেই ভোগ করতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা। সঠিক মান ঠিক না করে এবং প্রয়োগবিধি না মেনে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে একাধারে উৎপাদিত ফসল, মাছ, পানি ও জমি মারাত্মকভাবে বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে মানুষের শরীরে সহজেই প্রবেশ করছে এই বিষাক্ত উপাদান।
ফসল ও মাছে ভারী ধাতু প্রবেশ করছে মূলত মাটি ও পানি থেকে। মাটি ও পানি এমনভাবে রাসায়নিক দূষণের কবলে পড়েছে, যা খাদ্যচক্র হয়ে মানবদেহে ঢুকে মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলছে। নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
বেঁচে থাকার জন্য আমাদের যে খাদ্য গ্রহণ করতে হয়, সে খাদ্যই যদি রোগাক্রান্ত হওয়ার কারণ হয়, তাহলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে। কাজেই আমাদের খাদ্য বিষমুক্ত করার সব ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে। বিষাক্ত কীটনাশক ও সার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও শৃঙ্খলা আনতে হবে। বিষমুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই। খাদ্যে ভেজাল, অনিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি শতভাগ বন্ধে প্রশাসন, উৎপাদনকারী, বিক্রেতা ও মজুদকারীকে কঠোরভাবে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। একই সাথে পানি দূষণকারী, দূষিত পানি বিক্রি, মজুদকারী ও উৎপাদনকারীকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নাহলে ভেজাল, অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে, দূষিত পানি পান করে নানারকম প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাবে। যা বিভিন্ন সময়ে      চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলে আসছেন।
খাদ্যে ভেজাল রোধে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, র‌্যাব, বিএসটিআই, সিটি কর্পোরেশন পৃথক পৃথকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। পাশাপাশি ভেজাল, নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বাজারজাত ও বিক্রি, বন্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। এর সুফলও আসছে। তবে এসব কর্মকর্তা বছরব্যাপী এবং সারাদেশে বিস্তৃত হওয়া প্রয়োজন। তবেই সম্ভব মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য ও পানির নিশ্চয়তা। এসব নিশ্চত করা গেলে মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হবে পাশাপাশি সাধারণ মানুষ ব্যাপক চিকিৎসা ব্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে।

ফারিহা হোসেন

ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, কলাম, মোবা : ০১৮৫৯৮১২৭১৩, ই-মেইল : fariha12345prova@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon